সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, পাবনা:’আওয়ামী লীগের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন আমার দলের কিছু নেতারা, আর আমার বিপক্ষে কথা বলছেন। আমি যদি আওয়ামী লীগ করতাম বা তাদের সাথে আঁতাত করতাম তাহলে এখন আমাকে নিয়ে এমন মিথ্যা সমালোচনা করতে পারতেন না। যদি কেউ প্রমাণ দিতে পারেন আমি আওয়ামী লীগ করেছি বা আওয়ামী লীগের সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম তাহলে কৃষকদল থেকে পদত্যাগ করবো।’
নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে প্রতিবাদ সভা থেকে এমন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন পাবনার চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের কৃষকদলের সভাপতি নজরুল ইসলাম।
শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে চাটমোহর উপজেলার কুমারগাড়া গ্রামে এই প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘আ.লীগ কর্মী থেকে কৃষকদল নেতা, প্রতিবাদে ১০ জনের পদত্যাগ’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের কৃষকদলের ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করে উপজেলা কৃষকদল। কমিটিতে সভাপতি পদে নজরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি বাবু মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মোমিন ও প্রচার সম্পাদক পদে আলহাজ হোসেন এর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
স্থানীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ, কমিটির সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাংগঠনিক সম্পাদক ও প্রচার সম্পাদক বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সভাপতি নজরুল ইসলামের বাড়িতে নৌকার অফিস ছিলো। বিগত ১৬ বছরে তারা কোনদিন বিএনপি বা অঙ্গ সংগঠনের কোন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেননি। তারা সবসময় আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করেছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে নব ঘোষিত কমিটি থেকে ১০ জন পদত্যাগ করেন। একইসঙ্গে তারা নতুন করে ত্যাগী কর্মীদের নিয়ে কমিটি গঠনের দাবি জানান।
এসবের বিরুদ্ধে শনিবার প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন অভিযুক্ত কৃষকদল নেতা নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমি কৃষকদলকে এগিয়ে নিতে বিলচলন ইউনিয়নের প্রত্যেকটা ওয়ার্ডে কার্যক্রম শুরু করি। ২ নম্বর ওয়ার্ড নটাবাড়িয়ায় কৃষক সমাবেশ করতে গেলে বাধার মুখে পড়তে হয়। আওয়ামীলীগের সুরুজ বাহিনী, রিপন বাহিনী, ফরিদ বাহিনী, ছালাম বাহিনী আমাকে বাধা দেয়। আমি যখন তাদের প্রতিবাদ জানাই তখনই তারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে। তাদের সাথে আছে আমাদেরই দলের লোক বিএনপি করে কিছু দালাল।’
নজরুল বলেন, ‘৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার বিগত ১৬ বছর আওয়ামীলীগের সাথে আঁতাত করেছে, বর্তমান মেম্বার নজরুল ইসলাম তিনিও আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান আক্তার হোসেনের সাথে আঁতাতা করে গাড়ি চালক হিসেবে এখনও কাজ করছেন। হয়তো তিনি গাড়ি চালক হিসেবে মাসিক বেতন পান। যদি তাই না হবে তাহলে সে নিজেকে বিএনপি দাবি করে কেন আক্তার চেয়ারম্যানের গাড়ির চালক হিসেবে কাজ করে।’
তিনি বলেন, ‘আমাকে নিয়ে যে কথা উঠেছে আমি নাকি আওয়ামী লীগ থেকে কৃষকদলের নেতা হয়েছি। আমি এর প্রতিবাদ জানাই। যদি কেউ প্রমাণ দিতে পারেন আমি আওয়ামী লীগ করি বা আওয়ামী লীগের সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম, তাহলে কৃষকদল থেকে পদত্যাগ করবো। আমি ষড়যন্ত্রকারীদের বলতে চাই, আপনাদের নিজেদেরই পায়ের নিচে মাটি নাই। তাই আজকে আমাকে নিয়ে সমালোচনা করছেন। আমিতো আওয়ামী লীগের সাথে রাজপথে কখনও আঁতাত করিনি। আমি বরং আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুদ্ধ করেছি।’
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আক্তার চেয়ারম্যান তার বাসায় আমাকে দাওয়াত করেছিলেন, আমি যাইনি। কিন্তু নজরুল মেম্বার, আনোয়ার মেম্বার তার বাসায় দাওয়াত খেয়েছে। এটাই হয়তো আমার অপরাধ আমি চেয়ারম্যানের বাসায় দাওয়াত খেতে যাইনি। আমি যদি তার বাসায় দাওয়াত খেতাম, তাহলে হয়তো আমার বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্র হতো না। তিনি তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট দাবি করেন। বলেন, ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ হবে না।’
প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য দেন, পৌর বিএনপি’র সাবেক আহ্বায়ক এ এম জাকারিয়া, সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুর রহিম, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক গোলজার হোসেন, যুগ্ন আহবায়ক মনির হোসেন, বিলচলন ইউনিয়ন বিএনপি’র সাবেক সদস্য সচিব আশরাফুল খান, উপজেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মতিন, বিলচলন ইউনিয়ন কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মমিন হোসেন প্রমুখ।
১০:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম :
আ.লীগ করতাম এটা প্রমাণ করতে পারলে কৃষকদল থেকে পদত্যাগ করবো’
-
নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশিত : ০৯:৫৬:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫
- 4
ট্যাগ :
জনপ্রিয়